গুটি গুটি পায়ে নয় খুব দ্রুত এগিয়ে আসছে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। তাই সারাদেশে লকডাউন এর মাঝেও মার্কেট ও বিপণিবিতানগুলোতে দারুন ভিড়। গাদাগাদি আর ঠেলাঠেলিতে সেখানে নেই স্বাস্থ্যবিধি পালনের কোন সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরন। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের এই দুঃসময়ে জীবন রক্ষার চেয়ে আনন্দ অবগাহনে নিজেদের ভাসিয়ে দিতে সবাই ব্যস্ত। শুধু মার্কেট বিপণিবিতানে নয় ঈদ উপলক্ষে নাড়ির টানে আপনজনের কাছে ছুটে যাবার এক প্রতিযোগিতাও সবাইকে আতঙ্কিত করেছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও মানুষ পায়ে হেঁটে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ভেঙে ভেঙে নিজ নিজ ঠিকানায় ছুটছে। পাটুরিয়া ও শিমুলিয়া ঘাটে মৌচাকের মতো গাদাগাদি মানুষের ভিড় ঠেকাতে বর্ডার গার্ড রেজিমেন্ট নামিয়ে চেকপোস্ট বসিয়ে মানুষের স্রোত নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ গত ৮ মে থেকে দিনের বেলা ফেরি পারাপার বন্ধ ঘোষণা করলেও মানুষের চাপে মাঝে মধ্যে ফেরি পারাপার অব্যাহত রাখতে দেখা যাচ্ছে। যানবাহন পারাপারের এসব ফেরিতে একটি মোটরসাইকেলও স্থান পাচ্ছে না মানুষের চাপে। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘর ফেরত মানুষ শত বিড়ম্বনা ও প্রতিবন্ধকতার মাঝেও নাড়ির টানে যে যেভাবে পারছে গন্তব্যে ফিরছেন। বাস-রেল-লঞ্চ বন্ধ থাকলেও বিমান খুব সীমিত পরিসরে চলছে। দেশের ১০টি রুটে স্বাভাবিক সময়ে ১০০টি বিমান চললেও এখন চলছে অর্ধেক। ফলে বিমানের ভাড়া দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষ রা। অথচ সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের উদাস। যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই যেতে হচ্ছে। ঈদযাত্রা সবসময় বিরম্বনার। অন্যান্য সময় সব ক্ষেত্রে সিডিউল বিড়ম্বনা আর অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের মত বিড়ম্বনা থাকলেও এবার পরিবহন-ই নেই। ফলে মাইক্রোবাস-ট্রাক-লরি- মোটরসাইকেল যে যেভাবে পারছে ছুটছে গন্তব্যে। আর এ সুযোগটা নিচ্ছে মলম পার্টি। তারা যাত্রী সেজে মাইক্রোতে উঠে যাত্রীদের সর্বস্ব লুট করে নিচ্ছে। সিরাজগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ গত দুই সপ্তাহে ১৮ জন অচেতন মানুষকে এবং একজন মৃত ব্যক্তিকে হাইওয়ে থেকে উদ্ধার করেছেন। ঈদ আসতে আসতে আরও কতজন যে মলম পার্টির শিকার হবেন তার কোন হিসেব কারো পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। তাই আতঙ্ক নিয়েই সবাই ছুটছেন আপনজনের কাছে। স্বাস্থ্য বিধি না মেনে নিরাপদ দূরত্ব বজায় না রেখে ঈদযাত্রা যে সারা দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়িয়ে দিবেনা তার নিশ্চয়তা কে দেবে। এদিকে ভারতীয় ভেরিয়েন্টের অস্তিত্ব কয়েক জনের শরীরে পাওয়ায় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আতঙ্কে রয়েছেন। পরিস্থিতি যেন ভারতের মতো ভয়াবহ না হয়। কিন্তু যাদের বাঁচাতে এ আতঙ্ক তারা বেপরোয়া। একটি ঈদ আপনজনের সাথে না করলে কি এমন হবে! কিন্তু আপনার মাধ্যমে করোনার সংক্রমণ হলে আপনজন হারানোর কান্না কি করে সংবরণ করবেন। তাই সাবধান এবং সতর্ক না হলে আমরা নিজেরাই নিজেদের বিপদে পড়বো। সবাই ভালো থাকুন। ঈদ বয়ে আনুক সবার মাঝে অনাবিল আনন্দ।
Leave a Reply